দিনাজপুরের হিলির আলীহাট ইউনিয়নের কাশিয়াডাঙ্গার তুলশিগঙ্গা নদীতে তৈরি কাঠের সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বেহাল অবস্থায় থাকা সেতুটি দিয়ে পাঁচ গ্রামের মানুষ ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রোববার (৩১ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুর্বল কাঠের সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করছে ভ্যান-রিকশা, মোটরসাইকেল, সাইকেলসহ আশপাশের এলাকার মানুষজন।
দুই একটি ছোট যানবাহন কিংবা লোকজন উঠলেই সেতুটি নড়েচড়ে উঠছে। চলার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে সবাই পারাপার করছেন সেতুটি। তুলশিগঙ্গা নদীতে কোন দিনই সেতু ছিল না। সেতু না থাকায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানীয় বাসিন্দাদের কষ্ট করে যাতায়াত করতে হতো। নদী পারাপারের জন্য ছিলো ছোট একটা নৌকা। দীর্ঘদিন ধরে সরকারের উপর মহলে সেতুর জন্য ধর্ণা দিয়েও গ্রামবাসীর স্বপ্ন পূরন হয়নি। বছরখানেক আগে স্থানীয় যুবকরা তাদের প্রচেষ্টায় নির্মাণ করেন কাঠের এই সেতুটি।
কিন্তু সেতুটি তেমন মজবুদ নই। একটি সাইকেল উঠলেই নড়তে থাকে সেতুটি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাঠের এই সেতু দিয়ে আলীহাট ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের লোকজন হিলিসহ পার্শ্ববর্তী ঘোড়াঘাট উপজেলা এবং জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। ছোট আলীহাট গ্রামের রমেনা বেগম বলেন, ‘নিজের অসুস্থতার জন্য জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিব হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেতুটির জন্য ভ্যান বা কোন গাড়ি আসতে চাইনা। একটি সেতু থাকলে এমনটি হতো না। এছাড়া কাঠের সেতুটি দিয়ে বর্তমানে চলাফেরা করা খুব বিপদজনক হয়ে উঠছে।’
মোজাম্মেল হক নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘এই নদীর আশেপাশে কোন ব্রিজ নেই। তাই বাধ্য হয়ে নড়বড়ে কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করি। গাড়ি সেতু উঠলে জীবন আর জীবন থাকে না। মনে হয় কখন যেন ভেঙে পড়বে সেতুটি। তাই সরকার যদি এখানে একটা বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে দিতো তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’ ভ্যানচালক মোর্শেদ আলী বলেন, ‘আলীহাটসহ কয়েকটি গ্রামের যাত্রী নিয়ে সারাদিন এই সেতু পার হয়ে ডুগডুগি বাজারে যাওয়া-আসা করি। কাঠের সেতুটি এতোই নড়ে যে যাত্রীদের নামিয়ে সেতু পার হই।’
আলীহাট ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, ‘কাশিয়াডাঙ্গা ব্রিজের জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আশা করছি ব্রিজটি নির্মাণ হলে ৫ গ্রামের মানুষের কষ্ট দুর্দশা দূর হবে।’ হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ আলম বলেন, ‘পাঁচটি গ্রামের মানুষ কষ্ট করে কাশিয়াডাঙ্গা নদী দিয়ে চলাচল করেছেন।
তু না থাকায় তাদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তবে এই নদীর ওপর নতুন সেতু নির্মাণের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সেতু নির্মাণ শুরু হবে।’